LawNano

ডিভোর্স আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করুন

আদালত তালাকের জন্য দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাখ্যান করতে পারে কি?

তালাকের মামলা প্রত্যাখ্যানের কারণগুলি

তালাক একটি ব্যথাপ্রদ এবং কষ্টকর প্রক্রিয়া হতে পারে। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে তালাকে সম্মত হলেও আদালত তালাকের দরখাস্ত প্রত্যাখ্যান করতে পারে। আদালত দরখাস্ত প্রত্যাখ্যানের কারণ বিভিন্ন রকম হতে পারে:

উভয় পক্ষ সম্মত তালাক

উভয় পক্ষ সম্মত তালাকে, স্বামী-স্ত্রী উভয়েই বিবাহ বিচ্ছেদে রাজি হয়। তবে আদালত নিশ্চিত করতে চায় এই সম্মতি স্বেচ্ছায় দেওয়া হয়েছে, কোনও প্রকার নির্যাতনের মাধ্যমে নয়। আদালত স্বামী-স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং মিলিত হওয়ার চেষ্টা করে তারপর তালাক দেয়। যদি বিচারক সম্মতি সম্পূর্ণরূপে স্বেচ্ছায় দেওয়া হয়েছে তাতে সন্তুষ্ট না হন, তাহলে দরখাস্ত প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে। বিবাহের এক বছরের মধ্যে দাখিলকৃত তালাক দরখাস্তগুলি প্রায়শই প্রত্যাখ্যাত হয় কারণ আদালত মনে করে স্বামী-স্ত্রীরা মিলিত হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। সন্তানের কাস্টডি এবং সাপোর্ট নিয়ে সমস্যাগুলিকে আদর্শভাবে সমাধান করা দরকার উভয় পক্ষ সম্মত তালাকের আবেদন জমা দেওয়ার আগে। যদি কাস্টডি নিয়ে বিরোধ থাকে, আদালত সন্তানের হিতের জন্য দরখাস্ত খারিজ করবে।

বিবাদিত তালাক

বিবাদিত তালাকে, এক স্বামী/স্ত্রী তালাকের দরখাস্ত দায়ের করেন আর অপর পক্ষ বিরোধ করে। আদালত তালাক দিতে পারে যদি দায়ী পক্ষ পরমার্শকতা, নির্যাতন বা পরিত্যাগ ইত্যাদি বৈধ কারণ প্রমাণ করতে পারে। যদি দায়ী পক্ষ তালাকের কারণ যথা – ফটোগ্রাফ, মেডিক্যাল রেকর্ড, সাক্ষ্য প্রমাণ দিতে না পারে তাহলে আদালত দরখাস্ত খারিজ করবে। কনক্রিট প্রমাণ ছাড়া কোন অনিশ্চিত অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হবে না। দায়ী পক্ষ প্রমাণ করতে হবে যে বিবাহ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।

প্রক্রিয়াগত ভুল

আদালত তালাক মামলায় কঠোর প্রক্রিয়াগত নিয়ম মেনে চলে। উভয় পক্ষ সম্মত তালাকেও প্রক্রিয়াগত ভুল থাকলে দরখাস্ত খারিজ হতে পারে, যেমন কোর্ট ফি স্ট্যাম্প না থাকা, পুরনো ফর্ম ব্যবহার করা, বাধ্যতামূলক নথিপত্র না থাকা বা ভুল প্রক্রিয়া অনুসরণ করা। অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ করা প্রক্রিয়াগত ত্রুটি সর্বোপরি কমায়। তালাক মামলা নিয়মিত হাতে নেওয়ায় তারা আদালতের নিয়ম, নথিপত্র ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত।

READ  একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিবাহবিচ্ছেদের সুবিধা কি?

অসাধারণ কষ্ট না থাকা

হিন্দু আইন অনুযায়ী, স্বামী বা স্ত্রী অসাধারণ কষ্ট বা অবঞ্চনার কারণে তালাকের দাবি জানাতে পারে। কিন্তু সাধারণ দম্পতি বিরোধ, আন্তরিকতা বা যোগাযোগের অভাব অসাধারণ কষ্ট হিসেবে গণ্য হয় না। দায়ী পক্ষ প্রমাণ করতে হবে যে স্বামী/স্ত্রী নির্যাতন, পরমার্শকতা বা অসহায় অবস্থা সৃষ্টি করেছেন। যদি আদালত বিশ্বাস করে না যে বিবাহ ভেঙে যাওয়ার অসাধারণ কারণ রয়েছে, তাহলে তালাকের দরখাস্ত প্রত্যাখ্যান করবে।

সংক্ষেপে, আদালত বিবাহ ব্যবস্থার পবিত্রতা রক্ষা করার চেষ্টা করে। তালাক দেওয়া হয় কেবল যখন সকল আইনি প্রয়োজনীয়তা স্পষ্টভাবে পূরণ হয়, মিলিত হওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তালাক চাওয়া স্বামী-স্ত্রীদের অবশ্যই দক্ষ আইনজীবীর পরামর্শ নিতে হবে, বিবাহ ভাঙ্গার কারণ সত্যিকারের তথ্য তুলে ধরতে হবে, অনাস্থাপনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে এবং আর কোন মিলিত হওয়ার সুযোগ নেই তা প্রমাণ করতে হবে। এটি আদালতের তালাক দরখাস্ত প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

Scroll to Top